০৪নং গজারিয়া ইউনিয়ন
ফুলছড়ি, গাইবান্ধা।
০৪নং গজারিয়া ইউনিয়নে যে সকল নদ-নদী রহিয়াছে তাহার বিবরণ নিম্ন রূপ:
নদ-নদী যেমন ভূগঠনের মুখ্য ভূমিকা পালন করছে তেমনি , মানব সভ্যতার ক্রম-বিকাশেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে বিকশিত নদীমাতৃক এই বাংলাদেশের অনেক নদী-তীরে গড়ে উঠেছে বন্দর, নগরী হাট বাজার ইত্যাদি।
আদিকাল থেকে গজারিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে ব্রক্ষপুত্র, ঘাঘট, যমুনা ইত্যাদি নদ-নদী প্রবাহিত হয়েছে। ইউনিয়নের ভূমিগঠন, জনবসতি স্থাপন, শস্য উৎপাদন , জলপথে যোগাযোগ , ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আর্থ -সামাজিক কর্মকান্ডে এবং নিজস্ব সংস্কৃতি বিকাশে এই নদ-নদী গুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।
১৮০৯ খৃীষ্টাব্দের জরিপে মি, বুকানন , হ্যামিলটন এতদাঞ্চারের নদী- নালা গুলোর বর্ণনা দিতে গিয়ে উল্লেখ করেছেন যে, ১৭৮৩ সালে জেমস রেনেল অংকিত বাংলাদেশের মানচিত্র যে, নদী -নালা গুলোর বিবরণ রয়েছে বর্তমানে সেগুলি চিহৃত করা কষ্টসাধ্য। নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে এবং পরিত্যক্ত গতিপথ ভরাট হয়ে পুরানো নদীপথের চিহৃ মুছে গেছে। আবার একই নদীর গতিপ্রবাহ ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। তিনি ব্রক্ষপুত্র, তিস্তা, করতোয়া এর মূল ধারা শাখা -প্রশাখা ও উপনদী এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নালা গুলির বিষদ বিবরণ দিয়েছেন। গজারিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে যে নদীগুলো প্রবাহিত হয়েছে সেগুলোর মোট আয়তন ৯৯.৭১ কিঃ মিঃ নিম্নে এই নদী-নালা গুলোর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলোঃ
ব্রক্ষ্মপুত্রঃ
পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ ও দীর্ঘ নদ ব্রক্ষ্মপুত্র। তিববত সাংপো, আসামে ডিহং পরে ব্রক্ষ্মপুত্র। গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদীর মিলিত হওয়ার পরে কোনাই ব্রক্ষ্মপুত্র এবং গজারিয়া ঘাটের নিম্নে যমুনা নামধারণ করে একই নদী গোয়াললন্দের নিকট পদ্মার সঙ্গে মিলিত হয়েছে।
তিববতের মানস সরোবরের নিকট চেমাইয়াংদূং হিমবাহ থেকে ব্রক্ষ্মপুত্র নদের উৎপত্তি। তিববতের অপর নাম সাংপো বা সানপো। এই নামে নদীটি হিমালয়ের পাদদেশে থেকে বরাবর উত্তর পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়েছে। এরপর সাদিয়া নামক স্থানে হিমালয়ের একটি ফাঁক দেখে নদী নেমে পরে ভারতের আসাম রাজ্যে। আসাম উপত্যকায় প্রথম ডিহং এবং পরে ব্রক্ষ্মপুত্র নামে নদীটি পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়। ৭২৪ কিঃ মিঃ প্রবাহিত হওয়ার পর গারো পাহাড়ের নিকট দক্ষিণ দিকে বাক নিয়ে নদীটি কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার নারায়ণপুর ইউনিয়নের মায়ালী নামক স্থান দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এখান থেকে নদীটি দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়ে চিলমারী থানার দক্ষিণাংশ দিয়ে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ণে প্রবেশ করে দক্ষিণে প্রবাহিত হতে থাকে এবং সাঘাটা থানার হলদিয়া ইউনিয়নের নলদিয়া গ্রামের মধ্যে দিয়ে এই নদী বগুড়া জেলায় প্রবেশ করেছে। ফুলছড়ি থানার গজারিয়া ঘাটের উত্তরে দক্ষিণে এই নদী কোনাই যমুনা বা যমুনা নাম ধারণ করে বগুড়া , সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, টাঙ্গাইল জেলার সীমানা অতিক্রম করে গোয়ালন্দের নিকট পদ্মা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। উৎসব থেকে শেষ পর্যন্ত এই নদী ২৭৩৭ কিঃ মিঃ তন্মধ্যে বাংলাদেশে এর অংশ ২৭৭ কিঃ মিঃ।
ঘাঘটঃ
প্রাচীনকালে থেকেই ঘাঘট একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। এর তীরেই গড়ে উঠেছে সাবেক জেলা সদর রংপুর এবং গাইবান্ধা জেলা সদর।
ঘাঘট তিস্তার শাখা নদী। নীলফামারীর জেলার কিশোরগঞ্জ থানার কুজিপাড়া গ্রামে এই নদীর উৎপত্তি। উৎপত্তিস্থল থেকে গঙ্গাচড়া থানার পশ্চিম সীমানা দিয়ে রংপুর সদর থানা অতিক্রম করে পীরগাছা থানায় প্রবেশ করে আলাইপুরি নদীকে সাথে নিয়ে সাদুল্যাপুর উপজেলার রসুলপুরের নিকট দিয়ে গাইবান্ধা জেলায় হয়ে ফুলছড়ি উপজেরার গজারিয়া গ্রামে প্রবেশ করেছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস